রাজধানী ঢাকার বাতাস এর বাসিন্দাদের জন্য বিপদ জনক হয়ে উঠেছে, হুমকি হয়ে উঠেছে ঢাকার প্রায় দেড় কোটি মানুষের জন্য। বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম নগরী ঢাকার পরিবেশের যে অবস্থা, তাতে অধিবাসীরা ভয়ানক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। বাসিন্দাদের রোগব্যাধির কমপক্ষে ২২ শতাংশের জন্য পরিবেশ দূষণের বিষয়গুলো সরাসরি দায়ী। বায়ু দূষণে প্রতি বছর ঢাকায় মারা যায় ১৫ হাজার লোক। ব্রংকাইটিজে আক্রানত্দ হচ্ছে ১ লাখ ১৪ হাজার লোক। শিশুদের বেড়ে ওঠা বুদ্ধিমত্তা বিকাশ হ্রাস পাচ্ছে প্রচন্ডভাবে।
ঢাকার বাতাস দূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে রাসত্দায় চলাচলকারী গাড়ি, আশপাশের শিল্কপ্পাঞ্চল, ইটভাটা ও নাগরিক বর্জ্য। গাড়ির সংখ্যা প্রতি বছর গড়ে ১০ শতাংশ হারে বেড়ে চলেছে। প্রতিদিন রাসত্দায় প্রায় ১০০ টি নতুন প্রাইভেট কার নামছে। ঢাকার ভেতর সচল গাড়িগুলোর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই ত্রুটিপূর্ণ ইঞ্জিনের কারণে বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। ইদানিং প্রচুর পরিমাণ সিএনজি চালিত গাড়ি চলাচল করছে। এসব সিএনজি চালিত গাড়ি থেকে বের হয় ক্ষতিকারক বেনজিন। আর এই বেনজিনের কারণে ঢাকায় ক্যান্সারে প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে বহুলাংশে। এছাড়া সালফার ও সিসাযুক্ত পেট্রল ব্যবহার, জ্বালানি তেলে ভেজাল ও ত্রুটিপহৃর্ণ ইঞ্জিনের কারণে এসব গাড়ির ধোঁয়ার সঙ্গে কার্বন-ডাই অক্সাইড, কার্বন-মনোক্সাইড, নাইট্রোজেনের অক্সাইড, সালফার-ডাই অক্সাইড, অ্যালিহাইডসহ বিভিন্ন বসত্দকণা ও সিসা নিঃসারিত হয়ে বাতাসকে দূষিত করছে। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ পর্যনত্দ বাতাসে সিসার পরিমান বিপজ্জনক পর্যায়ে ছিল। পরিবেশ কর্মীদের আন্দোলনের মুখে সরকার সিসা বিহীন পেট্রোল আমদানী শুরু করলে অবস্থা অনেক নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি আবার বিপজ্জনক পর্য়ায়ে পৌছেছে।
এক জরিপ থেকে জানা যায়, ঢাকা শহরে গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া বছরে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ টন সুক্ষ্ম বস্তুকণা (এসএমপি/সাসপেন্ডেড পার্টিকুলেড ম্যাটার) বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে। বাতাসে ভাসমান এ সূক্ষ্ম বসত্দকণার আকার ১০ মাইক্রোনের চেয়েও কম। কণা যত সুক্ষ্ম হয় স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াতে তার শক্তিও তত প্রবলতর হয়। পরিবেশ অধিদফতর ঢাকার গাড়িতে ব্যবহূত ডিজেল, পেট্রল ও অকটেনের পরিমাণের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখেছে, গাড়িগুলো থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০০ কিলোগ্রাম সিসা, সাড়ে ৩ টন অন্যান্য বসত্দকণা, দেড় টন সালফার-ডাই অক্সাইড, ১৬ টন নাইট্রোজেনের অক্সাইড, ১ টন হাইড্রো কার্বন এবং ৬০ টন কার্বন মনোঅক্সাইড নির্গত হচ্ছে। ইতিমধ্যে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ কার্বন ও ভাসমান সুক্ষ্ম বস্তুকণা ঢাকার বাতাসকে মারাত্বক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। গত ২ বছরে বাতাসে কার্বনের পরিমাণ ৪ শতাংশেরও বেশি হারে বেড়েছে। বর্তমানে তা ৩৫০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন)। একটি বড় শহরে কার্বনে সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩০০ পিপিএম।
বাতাসে কার্বনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ঢাকার বার্ষিক গড় উষষ্ণতাও বেড়ে যাচ্ছে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে পড়ছে। বৃষ্টিপাত ও উষ্ণতার স্বাভাবিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটছে। এ ব্যাপারে সর্বাগ্রে প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের দায়িশীল সংস্থাগুলোর যথাযথ তদারকি। বায়ু দূষণসহ নানাবিধ দূষণের বিরূপ প্রভাবে ঢাকা অর্থাৎ এই মহানগরবাসীর জনস্বাস্থ্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে। নানারকম ব্যাধিতে মানুষ আক্রানত্দ হচ্ছে। সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোসহ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এক্ষেত্রে যদি সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক বিশেষ কিছু কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয় তাহলে ঢাকার বাতাস অনেকটাই নিরাপদ করা সম্ভব।
প্রিয় ব্লগারএই লেখাটি আমি আমার কলিগ হিল্লোল এর লেখা থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করেছি। মহা স্বপ্নবাজ এই ছেলেটা দেশ নিয়ে অনেক ভাবে। তার ভাবনার খানিকটা পাঠকদের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছি। এই পোষ্টের সকল প্লাস হিল্লোলের আর সংক্ষিপ্ত করতে গিয়ে যে ভুলগুলো হল তার জন্য সকল মাইনাচ আমার । ধন্যবাদ হিল্লোল।
Toy Story 3The Confession: A Novel
No comments:
Post a Comment